রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৫০ অপরাহ্ন
বিশেষ প্রতিবেদক : রোববার সকাল ১০টা। ইউপি কার্যালয়ের সামনে সারি সারি নারী-পুরুষের দীর্ঘ লাইন। সবার হাতে টোকেন। কর্মচারীরা একের পর এক টোকেন যাছাই করে মানুষকে তুলে দিচ্ছেন নতুন জন্মনিবন্ধন। মাঝে মধ্যে সেবা নিতে আসা মানুষের নাম ঘোষণা হয় মাইকেও। দীর্ঘ ভোগান্তি শেষে নতুন জন্মনিবন্ধন পেয়ে উচ্ছ্বাস মেতে উঠে সেবাপ্রার্থীরা।
রোববার দিনভর এমন চিত্রই দেখা গেল কক্সবাজারের মহেশখালীর কালারমারছড়া ইউনিয়ন পরিষদে। এদিন ২ হাজার নতুন জন্মনিবন্ধন বিতরণ হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ইউপি চেয়ারম্যানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ব্যতিক্রম সেবাটি জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিচ্ছেন ছয়জন কর্মচারী। কথা হলে চেয়ারম্যান তারেক বিন ওসমান শরীফ জানান, ৭ লক্ষ টাকা খরচে প্রতিজনের নিবন্ধন ফিঃ নিজস্ব তহবিল থেকে বহন করছেন।
ভুক্তভোগীরা বলছেন, আবশ্যিক ১৬টি পরিষেবা পেতে জন্মনিবন্ধন সর্বপ্রথম দরকার পড়ে।
জন্মনিবন্ধন নিতে আসা মিজ্জিরপাড়ার বাসিন্দা মো. শরীফ বলেন, পরিবারের পাঁচ সদস্যের জন্য এক মাস পূর্বে নতুন নিবন্ধনের আবেদন করে আজ পেয়েছি। অনেক ভালো লাগছে।
কালাররমারছড়া উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্র কামরুল হাসান বলেন, স্কুলে জমা দেয়ার জন্য তিন মাস আগে আবেদন করেছিলাম। সার্ভার জটিলতার কারণে অনেকবার যোগাযোগ করেও পাইনি। আজ পেয়ে অনেক খুশি লাগছে।
উত্তর ঝাপুয়ার বাসিন্দা আমির হোসেন বলেন, দুই সন্তানের জন্মনিবন্ধন করতে দু’মাস আগে আবেদন করি। সন্তানদের মাদ্রাসায় ভর্তি করিয়েছি, তবে নিবন্ধন দিতে পারিনি। আজ জমা দিব। গত এক বছর ধরে ঘুরেছি, আজকে পেয়ে অনেক আনন্দিত।
আঁধার ঘোনা এলাকার বাসিন্দা উম্মে হাবিবা নামের এক নারী বলেন, চার সন্তানের জন্মনিবন্ধন করতে আবেদন করেছিলাম। আমার এক সন্তান অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। তার রেজিষ্ট্রেশন করতে জন্মনিবন্ধনের অনলাইন কপি দরকার হয়েছে। গত চার মাসে অন্তত ১০ বার এসেছি। আজকে পেয়ে অনেক খুশি লাগছে।
ইউনিয়ন পরিষদ সুত্রে জানা গেছে, গত ২ ফেব্রুয়ারি ১৯০০ নারী-পুরুষের মাঝে জন্মনিবন্ধব বিতরণ করা হয়। সোমবার ২ হাজার জনকে বিতরণ হয়েছে। আরো প্রায় ১০ হাজার আবেদন জমা আছে। পর্যায়ক্রমে এসব বিতরণ করা হবে।
এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান তারেক বিন ওসমান শরীফ বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে ১৬টি সেবা পায় জনগণ। তার মধ্যে জন্মনিবন্ধন অন্যতম। সার্ভার জটিলতার কারণে মানুষকে ভোগান্তিতে পড়ে। এসব বিবেচনা করে গত ১৫ দিন ধরে ছয়জন কর্মচারী রাতদিন পরিশ্রম করে এই সেবা দিয়ে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, কালারমারছড়া বৃহৎ ইউনিয়ন। প্রায় ৭০ হাজার মানুষ বাস করে। নাগরিক সেবা দিতে আমরা বদ্ধপরিকর।
মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাইফুল ইসলাম বলেন, নতুন নিবন্ধন ও সংশোধনের ক্ষেত্রে জনগণ ইউনিয়ন ও উপজেলায় আসতে বলি। এ ক্ষেত্রে কালারমারছড়া সেবাটি ব্যতিক্রম। সংশ্লিষ্টরা সাদুবাদ পাওয়ার যোগ্য। পাশাপাশি অন্যান্য ইউনিয়নেও এ ধরনের সেবা বাড়াতে সকলকে আহবান জানাচ্ছি।
.coxsbazartimes.com
Leave a Reply